আদিবাসী মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ , গ্ৰেপ্তার ১ দুষ্কৃতি : চাঞ্চল‍্য এলাকায়

14th October 2020 8:35 pm বর্ধমান
আদিবাসী মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগ , গ্ৰেপ্তার ১ দুষ্কৃতি : চাঞ্চল‍্য এলাকায়


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :  গলায় ধারালো কাস্তে ঠেকিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে এক আদিবাসী গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠলো তিন দুস্কৃতির বিরুদ্ধে । এই ঘটনা জানাজানি হতেই বুধবার সকাল থেকে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের  নাদনঘাট থানার সাকরা গ্রামে । চিকিৎসার জন্য নির্যাতিতা বধূকে ভর্তি করা হয় কালনা সুপার স্পেশালিটি  হাসপাতালে।ঘটনা সবিস্তার জানার জন্য এদিন সকালেই নাদনঘাট ও কালনা থানার পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলে । নির্যাতিতার বয়ানের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ এদিনই  এক জনকে গ্রেপ্তার করে  জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে । অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার । নির্যাতিতা আদিবাসী বধূর পরিবারের বসবাস 
নাদনঘাট থানার সাকরা গ্রামেই । বধূ এদিন সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন ,মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে শৌচালয়ে যান ।পরে শৌচালয় থেকে বেরিয়ে তিনি নিজেদের ঘরে ঢুকতে যাচ্ছিলেন ।ওই সময়েই কাছেপিঠে  ওত পেতে থাকা এক মহিলা ও তিন পুরুষ দুস্কৃতি তাঁর উপর ঝাপিয়ে পড়ে ।ওই দুস্কৃতিরা সবাই গামছা দিয়ে তাদের মুখ ঢেকে রেখে ছিল । সেই কারণে তাদের কাউকেই তিনি চিনতে পারেন নি।  নির্যাতিতা বধূ জানান , তিনি শৌচালয় থেকে বেরুন মাত্রই ওই দুস্কৃতিরা তাঁর  গলায় ধারালো কাস্তে ঠেকিয়ে মুখ টিপে ধরে । এরপর তারা চ্যাংদোলা করে তাঁকে তুলে নিয়ে যায় বাড়ির অদূরে নির্জন মাঠে । সেখানে দুস্কৃতিরা মিলে তাঁকে  ধর্ষণ করে ।এই ঘটনার সময়ে দুস্কৃতিদের সাথে থাকা মহিলা দুস্কৃতিদের  মদত যোগায় । বধূ বলেন , অন্ধকারের মধ্যে কোনরকমে দুস্কৃতিদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে তিনি ধান খেতের আড়ালে লুকিয়ে পড়েন । পরে সেখান থেকে পালিয়ে তিনি  শ্বশুর বাড়িতে চলে আসতে সক্ষম হন ।বিধ্বস্ত শরীর নিয়ে বাড়িতে ফিরেই তিনি শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে তাঁর উপর হওয়া নির্যাতনের কথা জানান । এদিন সকালে পরিবারের লোকজন তাঁকে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে । নির্যাতিতা বধূ বলেন, এই গোটা ঘটনার সবিস্তার এদিন তিনি হাসপাতালের বেডে বসেই পুলিশকে জানিয়েছেন । এই ঘটনা বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীন) ধ্রুব দাস বলেন, “একটি ঘটনা ঘটেছে । মহিলার দেওয়া বয়ানের ভিত্তিতে কেশ রেজু করে ডাক্তার হেমব্রম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । ঘটনার তদন্ত চলছে । ”কালনা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে , মহিলা গণধর্ষনের অভিযোগ তুললেও এই বিষয়ে এদিন তিনি  মেডিকেল টেস্ট করাতে রাজি হননি।  মহিলা মেডিকেল টেস্ট করাতে  কেন রাজি হলেন না তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।  এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু । ফেসবুক লাইভে তিনি জানিয়েছেন , এই ঘটনার পরেই তিনি সহ আদিবাসী কয়েকজন জনপ্রতিনিধি তাঁরা গিয়েছিলেন পরিবারের সাথে দেখা করতে । পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে পরিবারটিকে । সরকার যেমন পাশে আছে ,  দল ও পাশে আছে বলে জানিয়েছেন দেবু বাবু । ইতিমধ‍্যেই পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়েছে এক দুষ্কৃতি । ঘটনায় জড়িত কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন সহ সভাধিপতি । 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।